
নতুন গাড়ি কিনেছেন। নতুন গাড়িটিতে যাতে কোনো আঁচড়ও না লাগে, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি দিচ্ছেন। কিন্তু বাইরের যত্নের পাশাপাশি এর ইঞ্জিন থেকে শুরু করে খুঁটিনাটি সবকিছুর প্রতি সজাগ না থাকলে দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে অচিরেই। গাড়ি চালানোর সময় কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চলা যেমন উচিত, তেমনি মনে রাখা উচিত গাড়ির জন্য ভালো যে বিষয়গুলো, সেসবও।
জেনে নিন কিছু বিষয়, যা গাড়ি ভালো রাখতে সাহায্য করবে-
১. অনেকেই ফরোয়ার্ড গিয়ার ও রিভার্স গিয়ার দ্রুত পরিবর্তন করে গাড়ি চালিয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে গাড়ির ক্ষতি হতে পারে। গিয়ার পরির্তনের সময় পুরোপুরি থেমে পুনরায় ভিন্ন গিয়ারে চালানো ভালো।
২. গিয়ারবক্স নষ্ট হলে গাড়িই অচল। তাই এটির প্রতি বিশেষ নজর দেয়া দরকার। প্রতি ৫০ হাজার কিলোমিটার পর এর তেল পরিবর্তন করা ভালো। পাশাপাশি খেয়াল রাখুন, এতে অতিরিক্ত তেল নেয়াও উচিত নয়। অন্যদিকে, গিয়ারবক্সের ফুটো বা ছিদ্র সম্পর্কে সজাগ থাকা ভালো। এসব ফুটো সাধারণত বাক্সের চারপাশেই থাকে। এ ধরনের লিকেজ দূর করতে বিশেষ ধরনের রাবারজাতীয় আইকা বা আঠা ব্যবহার করা হয়। তবে খুব ভালো হয় নতুন গিয়ারবক্স লাগিয়ে নিলে। এতে নিরাপদ থাকা যাবে।
৩. গাড়ি কেনার পর থেকে একটি রুটিন বেঁধে ফেলতে পারেন। যাতে নিয়ম করে শখের গাড়িটির পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণ কাজ ভালোভাবে করা সম্ভব হয়।
৪. গাড়ি একটি ফাইন টিউনড মেশিন, যেখানে বেশ কিছু যন্ত্রাংশ সচল রয়েছে। গাড়ি অচল হয়ে পড়বে, যদি না এর ইঞ্জিন যথাযথ কাজ করে থাকে। তাই ইঞ্জিনের সক্রিয়তা বজায় রাখার জন্য হলেও নিয়মিত ইঞ্জিনের রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত।
৫. গাড়ির ব্যাটারির ক্ষেত্রে একটু খরচ করে হলেও ভালো ব্র্যান্ডের ব্যাটারি ব্যবহার করা উচিত। জেনেরিক ব্যাটারি ব্যবহার না করাই ভালো।
৬. নিয়মিত গাড়ির ব্যাটারির টার্মিনালগুলো পরখ করা ভালো। খেয়াল রাখুন, তা যথেষ্ট পরিষ্কার ও শক্তভাবে লাগানো আছে কিনা। যদি তিন-চার বছরের মধ্যে আপনি গাড়ির ব্যাটারি বদলে না থাকেন, তবে শিগগিরই বদলে নেয়ার ব্যবস্থা করুন, কেননা কোনো আগাম সতর্কবার্তা বা লক্ষণ না দেখিয়েই হঠাৎ গাড়ির ব্যাটারি নষ্ট হতে পারে।
৭. গাড়ির কুলিং সিস্টেম নিয়মিত পরীক্ষা করতে হয়। তবে পরীক্ষা করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন ইঞ্জিন যাতে ঠাণ্ডা থাকে। মনে রাখবেন, কখনই আপনার গাড়ির ইঞ্জিন গরম থাকা অবস্থায় রেডিয়েটর ক্যাপ খুলবেন না।
৮. ইঞ্জিন ঠাণ্ডা রাখতে যে কুল্যান্ট ব্যবহার হয়, তার লেভেল নিয়মিতভাবে চেক করুন। শুধু গাড়ির ম্যানুয়ালে রেকমেন্ডেড কুল্যান্টই আপনার গাড়ির জন্য ব্যবহার করুন। ভালো ব্র্যান্ডের কুল্যান্ট ব্যবহার করুন।
গাড়ি চালানোর পাশাপাশি, গাড়ির টুকিটাকি সারাই কাজ নিজেই শিখে নিন। শিখে নিন চাকা পাল্টানোর কাজ। তাহলে পথেঘাটে আকস্মিক বিপদ থেকে যেমন বাঁচবেন, সারাইখানায় পৌঁছানোর আগে প্রাথমিক ব্যবস্থা নিজেই নিতে পারবেন।